আজ বুধবার, ২৪শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আরামে আছেন তারা

সংবাদচর্চা রিপোর্ট
বিএনপির অনেক নেতা মামলার ভারে দলীয় কর্মকান্ড থেকে কিছুটা পিছু হটেছেন। কেউ দেশ ছেড়ে বিদেশে চলে গেছেন। কেউ কেউ আপাতত চুপ করে রয়েছেন। তবে বিএনপির বড় বড় পদে রয়েছে এমন অনেকে গত দশ বছর তেমন কোন ঝামেলা পোহাননি। বরং ক্ষমতাসীনদের সাথে সখ্য করে আরামে আয়েশী জীবন কাটাচ্ছে তারা। নারায়ণগঞ্জের কতিপয় বিএনপি নেতাকে নিয়ে এমন অভিযোগ খোদ দলের নেতাকর্মীদের।

এ কাতারে সবার আগে নাম আসে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাসের। তিনি একাধারে জেলা বিএনপির সহ সভাপতি, ফতুল্লা থানা বিএনপির আহ্বায়ক। ১০ বছরের বেশী সময় ধরে এই বিএনপি নেতা চেয়ারম্যান থাকলেও তাকে নির্বাচন করতে হয়েছে মাত্র একবার। ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় এমপির আশির্বাদে তিনি ভোট ছাড়াই এষনও উপজেলা চেয়ারম্যান পদে আসীন আছেন। বিএনপির এই রাজনীতিক আওয়ামীলীগের এমপি শামীম ওসমানকে খুশী করতে প্রকাশ্যে আওয়ামীলীগের সভায় বক্তব্য দিয়েছেন। সেই বক্তব্যে আওয়ামীলীগের এমপির প্রশংসাও করতে দেখা যায় তাকে। ওই সভামঞ্চে আরেক আলোচিত বিএনপি নেতা ছিলেন। ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কুতুবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনিরুল আলম আলম সেন্টুও আওয়ামীলীগের সভায় শামীম ওসমানের গুণ গেয়ে বক্তব্য দেন। বিএনপির একাধিক নেতার দাবি, এবার শামীম ওসমানের দয়ায়ই চেয়ারম্যান হয়েছেন সেন্টু। এয়াড়া ক্ষমতাসীন দলের এমপির সাথে থাকায় তাকে তেমন মামলা মোকদ্দমার মুখোমুখি হতে হয়নি।

বন্দর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সহ সভাপতি। এই বিএনপি নেতাকে যতটা না দলীয় কান্ডে দেখা গেছে তার চেয়ে বেশী দেখা গেছে স্থানীয় জাতীয় পার্টির এমপিদের সাথে। অতীতে নাসিম ওসমান পরে সেলিম ওসমানের সাথে তার সখ্য ওপেন সিক্রেট। একাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি ঘোষনা দিয়ে ধানের শীষের প্রার্থীর সাথে না থেকে জাতীয় পার্টির সেলিম ওসমানের সাথে কাজ করেন।

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শওকতা হাসেম শকু মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক। তবে সেলিম ওসমান তাকে নিজের লোক বলেই পরিচয় দেন। এ সখ্যতার কারনে এই ওয়ার্ডে যুবলীগ বা আওয়ামীলীগের কোন নেতাকে কাউন্সিলর নির্বাচন করতে বাধা দেয়া হয় বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। সেলিম ওসমানের বিভিন্ন সভা সমাবেশে শকুকে দেখা যায়। দুইজনই বক্তব্যে দুইজনের প্রতি সখ্যতার বিষয়টি পরিস্কার করেন।

জেলা ও মহানগর বিএনপির একাধিক নেতার সাথে কথা বলে জানা গেছে, ক্ষমতাসীনদের সাথে সখ্য রাখার বিষয়টি কেন্দ্র জানে। তবে দলের দুঃসময়ের কারনে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় না। আর এ সুযোগ পুরোপুরি ব্যবহার করছে ওই নেতারা। কোন কোন নেতা আক্ষেপ করে বলেন, অনেক মামলা-হামলা নিয়ে আমরা পালিয়ে বেড়াই, জেলে যাই আর কোর্টের বারান্দায় ঘুরি। দলের কারনে, দলের চেয়াপার্সনের মুক্তি আন্দোলনের আমরা নানাভাবে কষ্টের স্বীকার হচ্ছি। আর তারা ক্ষমতাসীনদের সাথে সখ্য রেখে দিব্যি আরামে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

সর্বশেষ সংবাদ